অনেক মানুষই ততদিন পৃথিবীতে বেঁচে থাকেন না যতদিন ধরে বেঁচে আছেন জুলিও সিজার মোরা ও ওয়াল্ড্রামিনা দম্পতি। বিস্ময়কর হলেও এটাই সত্যি যে তারা এক সঙ্গে কাটিয়েছেন জীবনের ৭৯ বছর।
এখন জুলিও মোরার বয়স ১১০ বছর আর ওয়াল্ড্রামিনার বয়স ১০৪। বিশ্বের প্রবীণ দম্পতি হিসেবে তারা ইতিমধ্যে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের সার্টিফিকেট পেয়েছেন। এ খবর প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যম সিএনএন।
জুলিও সিজার মোরা জন্মগ্রহণ করেন ১৯১০ সালের ১০ মার্চ এবং ১৯১৫ সালের ১৬ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন ওয়াল্ড্রামিনা। ইকুয়েডরের এই দম্পতির যৌথ বয়স ২১৪ বছর, ৩৫৮ দিন।
১৯৪১ সালে বাবা-মায়ের অমতে গোপনে ভালোবেসে ওয়াল্ড্রামিনাকে বিয়ে করেন জুলিও মোরা। তারা বিয়ে করেছিলেন একটি চার্চে।
ওয়াল্ড্রামিনা বলেন, আমাদের দীর্ঘ দাম্পত্য জীবনে বিবাহবিচ্ছেদের মতো অন্য কোনো কিছুর কথা আমরা কখনো চিন্তাও করিনি।
ইকুয়েডরের রাজধানী কুইটোতে বসবাস করছেন তারা। এ দম্পতি পেশায় শিক্ষক ছিলেন। তাদের সন্তান চার জন, আর নাতি-নাতনি রয়েছে ১১ জন। নাতি-নাতনি ও তাদের ঘরের সন্তান মিলিয়ে মোট সদস্য ৩৩জন।
চলতি বছরের শুরুতে তাদের নাতি-নাতনিরা মূলত প্রথম ভাবেন তাদের জুলিও-ওয়াল্ড্রামিনাই সম্ভবত পৃথিবীর প্রবীণ দম্পতি। এরপর দম্পতির কন্যা সিসিলিয়া সমস্ত কাগজপত্র গিনেস কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়ে দেন। যাচাই-বাছাইয়ের পর আগস্টের মাঝামাঝি সময় গিনেস কর্তৃপক্ষ তাদেরকে বিশ্বের প্রবীণ দম্পতির সার্টিফিকেট দেন।
সিসিলিয়া বলেন, বাবা-মা এখনো শারীরিক-মানসিকভাবে সুস্থ রয়েছেন। কিন্তু মহামারির কারণে পরিবার থেকে বাবা-মা আলাদা ছিলেন। আমাদের বড় পরিবার। এসময় তারা পরিবারকে খুব মিস করেছেন।
এই প্রবীণ দম্পতির পছন্দ-অপছন্দের কথা জানিয়ে কন্যা সিসিলিয়া বলেন, বাবা-মা একসঙ্গে সিনেমা দেখতে পছন্দ করেন। বাবা টেলিভিশন দেখা ও দুধ খেতে পছন্দ করেন। আমার মা মিষ্টান্ন জাতীয় খাবার পছন্দ করেন। আর সংবাদপত্র পড়তে উপভোগ করেন।
দীর্ঘ জীবন পাওয়ার পরামর্শ দিয়ে ওয়াল্ড্রামিনা বলেন, ‘সত্য বলো। মিথ্য বলো না, কারণ মিথ্যা বললে পৃথিবীটাই হারিয়ে ফেলবে।’
গিনেস কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, এর আগে বিশ্বের সবচেয়ে প্রবীণ দম্পতি ছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের অস্টিনের বাসিন্দা জন এবং শার্লটে হেন্ডারসন। তাদের দুজনের যৌথ বয়স ছিল ২১২ বছর। নতুন রেকর্ডের অধিকারী জুলিও সিজার মোরা ও ওয়াল্ড্রামিনা দম্পতির যৌথ বয়স ২১৪ বছর, ৩৫৮ দিন।