চুম্বকের মতো সব লোহার বস্তুকে কাছে টেনে নেয় শরীর। চামচ থেকে শুরু করে পেরেক, ইস্ত্রি এমনকি লোহার যাবতীয় বস্তুই তার শরীরে আটকে যায়। এ চুম্বক মানব ১০ কেজি ওজনের লোহার বস্তু শরীরে নিয়েও দিব্যি হেঁটে বেড়াতে পারেন সবখানে।
এই চুম্বক-মানবের নাম অরুণ রায়কর। বয়স তার ৪২ বছর। বসবাস করেন ভারতের মধ্যপ্রদেশের সাগর জেলায়। তার শরীরে চৌম্বকীয় শক্তি আছে। পেশায় তিনি একজন ফটোগ্রাফার। তবে নিজের এ শক্তি সম্পর্কে অরুণের কোনো ধারণাই ছিল না।
একবার হাতুরি ও পেরেক দিয়ে টেবিল মেরামতের সময় অবিশ্বাস্য এই ঘটনাটি ঘটে যায়। অরুণ টের পান তার বুকে একটি পেরেক হঠাৎ করে আটকে আছে। তখন তিনি ভেবেছিলেন, হয়তো ঘামের কারণে পেরেকটি বুকে আটকে গেছে। এরপর তিনি আরও কয়েকটি পেরেক নিজের বুকে লাগানোর চেষ্টা করেন।
অরুণ দেখেন যে, লোহার পেরেকগুলো সামনে ধরলেই সেগুলো বুকে ও পেটে লেগে যাচ্ছে। ঠিক যেমন চুম্বক কাছে টেনে নেয় লোহাকে, ঠিক তেমনটিই ঘটে তার সঙ্গে।
বিষয়টি নিয়ে চিকিৎসকের সঙ্গেও পরামর্শ করেন অরুণ। তবে চিকিৎসকরা এর কোনো কারণ ব্যাখ্যা করতে পারেননি। তারাও অবাক হয়েছেন বিষয়টি দেখে।
এ বিষয়ে ওই এলাকার ডা. শৈলেন্দ্র শুক্লা বলেন, ‘তার শরীরে চৌম্বকীয় শক্তির প্রমাণ পেয়েছি। যা সত্যিই মানবশরীরে থাকার ঘটনা বিরল। তার শরীরে যে ম্যাগনেট রয়েছে, তার সাহায্যেই আমরা এমআরআই এবং ইসিজি স্ক্যান করে থাকি। তবে অরুণের শরীরে চৌম্বকীয় শক্তির ক্ষেত্র বাড়লেও তা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে চলে যাবে।
এরপর থেকেই তিনি সত্যিকার অর্থেই চুম্বক-মানব হয়ে ওঠেন। নিজেকে নিয়ে নানা পরীক্ষা-নীরিক্ষা করতে থাকেন। তার বুকে, পেটে এবং পিঠে সবচেয়ে বেশি চুম্বকীয় শক্তি কাজ করে। এসব স্থানে যেকোনো লোহার বস্তু দূর থেকে ধরলেই শরীরে আটকে যায়।
অরুণ বলেন, প্রথমে ভেবেছিলাম আমার এ অলৌকিক শক্তির কারণ বোধ হয় সৃষ্টিকর্তার অভিশাপ। তবে এটিকে আমি এখন সর্বশক্তিমানের আশীর্বাদ বলে জানি।
তিনি আরও বলেন, যখন আমার এলাকার মানুষ বিষয়টি জেনে যায়, তখন তারা আমাদের বাড়ির আশপাশ থেকেও আশা-যাওয়া বন্ধ করে দেয়। তখন অনেক কষ্ট পেয়েছিলাম। তবে এখন দূর-দূরান্ত থেকে মানুষ আমাকে একনজর দেখার জন্য আসেন।
অরুণ সবার সামনে এখন শরীরে ভারি ইস্ত্রি বসিয়ে রাখতে পারেন। এ ছাড়াও লোহার বিভিন্ন বস্তু তার শরীরে আটকে যায় মুহূর্তেই। তাকে দেখতে অনেক মানুষ ভিড় জমায় প্রতিদিন।
দর্শনার্থীদের অনেকেই বিশ্বাস করতে চান না। তারাও কাছে এসে লোহার বস্তু হাতে নিয়ে অরুণের শরীর বরাবর ধরতেই তা ছুটে গিয়ে আটকে যায় বুকে, পিঠে বা পেটে। এসব দেখে উপস্থিত সবাই তাজ্জব বনে যান।